ইসলাম। লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
ইসলাম। লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

ইসলাম সম্পর্কে যা আমাদের জানতে হবে

ইসলাম সম্পর্কে যা আমাদের জানতে হবে

  

ইসলাম শুধু একটি ধর্ম নয়, এটি একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থাএটি মানুষের আত্মিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও নৈতিক দিকনির্দেশনা দেয়। ইসলাম সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান অর্জন করা প্রতিটি মুসলমানের দায়িত্ব। এই নিবন্ধে আমরা ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলো তুলে ধরব, যা আমাদের জানা উচিত

Welftion Islamic Desk 



১. ইসলামের সংজ্ঞা ও মূল শিক্ষা

ইসলাম শব্দের অর্থ শান্তি, আনুগত্য ও আত্মসমর্পণ। ইসলাম আল্লাহর প্রতি পরিপূর্ণ আনুগত্যের নাম। ইসলামের মূল ভিত্তি হলো তাওহীদ (একত্ববাদ), নবুয়ত (নবীদের প্রতি বিশ্বাস) ও আখিরাত (পরকাল)।



২. ইসলামের পাঁচ স্তম্ভ

ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভ রয়েছে, যা প্রতিটি মুসলমানের জন্য অপরিহার্য:

  1. কালিমা শাহাদাহ: লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, এবং মুহাম্মাদ (সা.) আল্লাহর রাসূল)।
  2. সালাত (নামাজ): প্রতিদিন পাঁচওয়াক্ত নামাজ আদায় করা ফরজ।
  3. সিয়াম (রোজা): রমজান মাসে সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত উপবাস থাকা।
  4. যাকাত: নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পদের ওপর গরিবদের জন্য দান করা বাধ্যতামূলক।
  5. হজ: সামর্থ্যবানদের জন্য জীবনে একবার কাবা শরীফে হজ পালন করা ফরজ।



৩. ইসলামের প্রধান বিশ্বাসসমূহ

ইসলামে ছয়টি মৌলিক বিশ্বাস রয়েছে:

  1. আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাস
  2. ফেরেশতাদের অস্তিত্বে বিশ্বাস
  3. আসমানী কিতাবসমূহে বিশ্বাস
  4. নবী ও রাসূলগণের প্রতি বিশ্বাস
  5. কিয়ামত ও পরকালের প্রতি বিশ্বাস
  6. তাকদির বা ভাগ্যে বিশ্বাস





৪. ইসলামি জীবনব্যবস্থা

ইসলাম কেবল উপাসনার ধর্ম নয়, এটি জীবনযাত্রার প্রতিটি ক্ষেত্রে দিকনির্দেশনা দেয়।

  • নৈতিকতা: সত্যবাদিতা, ন্যায়পরায়ণতা, ধৈর্য ও কৃতজ্ঞতা ইসলামি জীবনের মূল বৈশিষ্ট্য।
  • পারিবারিক জীবন: ইসলামে পরিবারের গুরুত্ব অপরিসীম। পিতামাতার প্রতি শ্রদ্ধা, স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক এবং সন্তানের প্রতি দায়িত্ব ইসলামে স্পষ্টভাবে নির্ধারিত।
  • অর্থনৈতিক জীবন: সুদমুক্ত অর্থনীতি, ইনসাফপূর্ণ ব্যবসা এবং ধনী-গরিবের মধ্যে সম্পদের সুষম বণ্টনের উপর ইসলাম জোর দেয়।
  • আইন ও বিচার: ইসলামি আইন (শরিয়াহ) মানুষের অধিকার, সুবিচার ও সামাজিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করে।


৫. ইসলামে মানবতার শিক্ষা

  • ইসলাম বিশ্বমানবতার ধর্ম, যা ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের কল্যাণের কথা বলে।
  • অন্য ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বজায় রাখার শিক্ষা দেয়।
  • গরিব, এতিম ও অসহায়দের সাহায্য করা ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা।

৬. ইসলাম ও বিজ্ঞান

ইসলাম বিজ্ঞান ও জ্ঞানের অনুসন্ধানকে উৎসাহিত করে। কুরআনে বহু বৈজ্ঞানিক তথ্য রয়েছে, যা আধুনিক বিজ্ঞানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।


৭. ইসলামের পরকালীন বিশ্বাস

মুসলমানদের বিশ্বাস, মৃত্যু জীবনের শেষ নয়, বরং এটি একটি নতুন জীবনের সূচনা। মানুষকে তার কর্মের জন্য কিয়ামতের দিনে জবাবদিহি করতে হবে এবং তার ভিত্তিতে জান্নাত বা জাহান্নামে স্থান নির্ধারিত হবে।



ইসলাম কেবল একটি ধর্ম নয়, এটি একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। এটি মানুষের আত্মিক উন্নতি, সামাজিক শান্তি ও নৈতিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার জন্য নির্দেশনা দেয়। ইসলামের শিক্ষা মেনে চললে দুনিয়া ও আখিরাতে সফল হওয়া সম্ভব। আমাদের সবার উচিত ইসলামের মৌলিক জ্ঞান অর্জন করা ও সে অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করা।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে ইসলামের সঠিক জ্ঞান ও আমল করার তৌফিক দান করুন। আমিন।

রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

সময়ের আলো বাংলাদেশের উদীয়মান সংবাদপত্র

সময়ের আলো বাংলাদেশের উদীয়মান সংবাদপত্র

বাংলাদেশের সংবাদপত্র জগতে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন পত্রিকা যুক্ত হচ্ছে, যা গণমাধ্যমকে আরও সমৃদ্ধ করছে। এ ধারাবাহিকতায় "সময়ের আলো" একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দৈনিক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। এটি একটি জাতীয় দৈনিক, যা আধুনিক সাংবাদিকতার মান বজায় রেখে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করছে।


পত্রিকাটির সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

"সময়ের আলো" একটি বাংলা দৈনিক পত্রিকা, যা বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত হয়। পত্রিকাটি মূলত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদ, রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজ, সংস্কৃতি, খেলাধুলা এবং বিনোদনসহ বিভিন্ন বিষয়ে খবর পরিবেশন করে। এটি মুদ্রিত সংস্করণ ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে পাঠকদের কাছে পৌঁছে।

প্রকাশনা বছর: ২০১৯
ভাষা: বাংলা
ধরন: দৈনিক পত্রিকা
মূল লক্ষ্য: বস্তুনিষ্ঠ ও নিরপেক্ষ সাংবাদিকতা


সংবাদ কাভারেজ ও বৈশিষ্ট্য

"সময়ের আলো" পত্রিকাটি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে গভীর বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এর কিছু উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো:

  1. জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদ:

    • বাংলাদেশের রাজনীতি, নীতি-নির্ধারণ, সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগ নিয়ে প্রতিবেদন।
    • আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, বৈশ্বিক রাজনীতি ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ।
  2. অর্থনীতি ও ব্যবসা:

    • দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, বিনিয়োগ, ব্যাংকিং ও শেয়ারবাজার নিয়ে প্রতিবেদন।
    • ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের (SME) উন্নয়ন নিয়ে বিশেষ কভারেজ।
  3. সমাজ ও সংস্কৃতি:

    • সামাজিক সমস্যা, নারীর ক্ষমতায়ন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক সংবাদ।
    • বাংলা সাহিত্য, চলচ্চিত্র, নাটক ও অন্যান্য সাংস্কৃতিক বিষয়ে বিশ্লেষণ।
  4. খেলাধুলা:

    • জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্রীড়া ইভেন্ট, বিশেষত ক্রিকেট ও ফুটবল নিয়ে আপডেট।
  5. বিশেষ অনুসন্ধানী প্রতিবেদন:

    • দুর্নীতি, অনিয়ম ও সামাজিক অব্যবস্থাপনা নিয়ে গভীর অনুসন্ধান।

অনলাইন ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম

বর্তমান যুগে সংবাদপত্র শুধু মুদ্রিত সংস্করণেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং ডিজিটাল মাধ্যমেও ব্যাপক প্রভাব রাখছে। "সময়ের আলো" তাদের ওয়েবসাইট এবং সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে পাঠকদের সর্বশেষ সংবাদ দ্রুত পৌঁছে দেয়।

ওয়েবসাইট: সময়ের আলো অনলাইন পোর্টালে ২৪/৭ সংবাদ আপডেট করা হয়।
সোশ্যাল মিডিয়া: ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটারসহ অন্যান্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সংবাদের প্রচার।


সময়ের আলোর ভবিষ্যৎ ও সম্ভাবনা

বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম দিন দিন প্রতিযোগিতামূলক হয়ে উঠছে। "সময়ের আলো" নিরপেক্ষতা, বস্তুনিষ্ঠতা এবং গভীর বিশ্লেষণমূলক প্রতিবেদনের মাধ্যমে পাঠকদের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। ভবিষ্যতে, এটি আরও আধুনিক প্রযুক্তি ও ডিজিটাল মিডিয়ার মাধ্যমে পাঠকদের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করবে।

বাংলাদেশের গণমাধ্যমে "সময়ের আলো" একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন। বস্তুনিষ্ঠ ও সত্যনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করে এটি পাঠকের মনে জায়গা করে নিচ্ছে। নিরপেক্ষ ও দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার মাধ্যমে "সময়ের আলো" এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে, যা দেশের গণমাধ্যমকে আরও শক্তিশালী করে তুলবে।



শীতে অযু ও গোসলে বিশেষ সতর্কতা

ওয়েল্ফশন অনলাইন ডেস্ক বিশেষ কলাম

শীতের মৌসুমে মুসলমানদের ইবাদত পালনে বিশেষ করে অযু ও গোসলের ক্ষেত্রে কিছু বাড়তি সতর্কতা নেওয়া প্রয়োজন। শীতের ঠান্ডা পানি অনেক সময় শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে, বিশেষ করে শিশু, বৃদ্ধ ও অসুস্থদের জন্য। তীব্র ঠান্ডার কারণে অনেকেই যথাযথভাবে অযু বা গোসল করতে অনীহা বোধ করেন, যা ইবাদতের জন্য বাধা সৃষ্টি করতে পারে। তাই শরীর ও স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নশীল থেকে কীভাবে সঠিকভাবে অযু ও গোসল করা যায়, তা নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরা হলো।


শীতে অযুর ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা

১. উষ্ণ পানি ব্যবহার করুন:

  • প্রচণ্ড ঠান্ডার মধ্যে খুব বেশি ঠান্ডা পানি ব্যবহার না করে হালকা উষ্ণ পানি ব্যবহার করা উত্তম।
  • সরাসরি ফুটন্ত গরম পানি না মিশিয়ে সহনীয় মাত্রায় গরম পানি ব্যবহার করুন।
  1. শীতের সকালে অযু সহজ করতে কৌশল অবলম্বন করুন:

    • ফজরের অযুর জন্য একটু আগে থেকেই প্রস্তুতি নিন।
    • হাতে-মুখে পানি দেওয়ার আগে কপালে কয়েক ফোঁটা পানি দিন, এতে শীতের ধাক্কা কম অনুভূত হবে।
    • শীতের কাপড় না খুলেই ধীরে ধীরে অঙ্গগুলো ধৌত করুন।
  2. অঙ্গগুলো ভালোভাবে শুকিয়ে নিন:

    • অযুর পর হাত-মুখ শুকনো কাপড় বা তোয়ালে দিয়ে মুছে নিন, যাতে ঠান্ডা লাগার সম্ভাবনা কমে।
    • ভেজা কাপড় পরিহার করে দ্রুত শুকনো ও গরম পোশাক পরিধান করুন।
  3. মসজিদে যাওয়ার সময় বিশেষ সতর্কতা:

    • অনেক সময় ভেজা পায়ে জুতা পরলে ঠান্ডা আরও বেশি অনুভূত হয়, তাই উষ্ণ মোজা পরিধান করুন।
    • অযুর পর মাথায় গরম টুপি পরা এবং গলা ও হাত ঢেকে রাখা শরীরকে ঠান্ডার হাত থেকে রক্ষা করবে।

শীতে গোসলের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা

১. উষ্ণ পানি ব্যবহার করুন:

  • শীতকালে সম্ভব হলে গরম পানির ব্যবস্থা রাখুন।
  • সরাসরি গরম পানি ব্যবহার না করে হালকা উষ্ণ পানি ব্যবহার করুন, যাতে ত্বকের ক্ষতি না হয়।
  1. সময় বেছে নিন:

    • প্রচণ্ড ঠান্ডার সময় যেমন ভোরবেলা বা রাতের শেষভাগে গোসল এড়িয়ে চলুন।
    • দিনের তুলনামূলক উষ্ণ সময় বেছে নিলে শীতের কষ্ট কম অনুভূত হবে।
  2. পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিন:

    • গোসলের পরপরই শুকনো তোয়ালে দিয়ে শরীর মুছে ফেলুন।
    • দ্রুত গরম কাপড় পরিধান করুন যাতে ঠান্ডা লাগার সম্ভাবনা কমে।
  3. গোসলের বিকল্প ব্যবস্থা (তায়াম্মুম) প্রয়োগ:

    • যদি খুব বেশি ঠান্ডার কারণে অসুস্থতার ঝুঁকি থাকে, তবে ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক তায়াম্মুম করা যেতে পারে।
    • তবে শারীরিকভাবে সুস্থ ও সক্ষম হলে যথাযথভাবে গোসল করাই উত্তম।

স্বাস্থ্যগত দিক থেকে সতর্কতা

  • শীতে গোসল ও অযুর ফলে শ্বাসনালির সংক্রমণ, জ্বর বা ঠান্ডা লাগতে পারে। তাই গরম পানির ব্যবহার ও শরীর গরম রাখা জরুরি।
  • বাতাসে আর্দ্রতা কম থাকায় ত্বক শুষ্ক হয়ে যেতে পারে, তাই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত।
  • ঠান্ডা পানির ধাক্কা থেকে বাঁচতে গোসলের সময় প্রথমেই পায়ে পানি দিন, তারপর উপরের অংশে পানি ঢালুন।

শীতে অযু ও গোসল অবশ্যই করা উচিত, তবে শরীরের যত্ন নিয়ে এবং সুন্নাহ মোতাবেক কিছু কৌশল অনুসরণ করলে তা আরও সহজ হয়ে ওঠে। ইসলামী জীবনব্যবস্থার অন্যতম সৌন্দর্য হলো এতে শরীরের সুস্থতার দিকেও সমানভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তাই শীতে ধর্মীয় বিধান মেনে অযু ও গোসলের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা আমাদের জন্য কল্যাণকর হবে।

ওয়েল্ফশন অনলাইন ডেস্ক


মানসিক চাপ কমাতে মুমিনের করণীয়

ওয়েল্ফশন ইসলাম ডেস্ক

মানবজীবনে মানসিক চাপ (Stress) একটি স্বাভাবিক বিষয়, যা ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ও কর্মজীবনের নানা চ্যালেঞ্জের কারণে সৃষ্টি হতে পারে। তবে একজন মুমিনের জন্য ইসলাম চিরন্তন সমাধান নিয়ে এসেছে, যা তাকে মানসিক চাপ থেকে মুক্তি দিতে পারে। আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস, ধৈর্য, নামাজ, দোয়া এবং জীবনকে সহজভাবে গ্রহণ করার মাধ্যমে মানসিক প্রশান্তি অর্জন করা সম্ভব।


১. আল্লাহর প্রতি তাওয়াক্কুল (ভরসা রাখা)

মুমিনের সবচেয়ে বড় শক্তি হলো আল্লাহর প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস ও ভরসা। কুরআনে বলা হয়েছে:

"যে ব্যক্তি আল্লাহর ওপর ভরসা করে, তাঁর জন্য তিনিই যথেষ্ট।" (সূরা আত-তালাক: ৩)

  • দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপ অনেক সময় ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ থেকে আসে। যদি কেউ সত্যিকার অর্থে বিশ্বাস রাখে যে আল্লাহ সবকিছু পরিচালনা করছেন এবং তিনি সর্বোত্তম পরিকল্পনাকারী, তাহলে অযথা দুশ্চিন্তা কমে যাবে।

২. পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া

নামাজ কেবল ইবাদত নয়, এটি মানসিক চাপ কমানোর অন্যতম কার্যকর উপায়। আল্লাহ বলেন:

"নিশ্চয়ই নামাজের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করো, আর এটি বিনীতদের ছাড়া অন্যদের জন্য কঠিন।" (সূরা আল-বাকারাহ: ৪৫)

  • নামাজে আত্মসংযম ও ধ্যানের মাধ্যমে মনের চাপ কমে যায়।
  • নিয়মিত সিজদাহ করার মাধ্যমে হৃদয়ে প্রশান্তি আসে।

৩. কুরআন তিলাওয়াত করা

কুরআন হলো মুসলমানদের জন্য সবচেয়ে বড় মানসিক চিকিৎসা। আল্লাহ বলেন:

"আমি মুমিনদের জন্য কুরআনে আরোগ্য ও রহমত নাজিল করেছি।" (সূরা আল-ইসরা: ৮২)

  • কুরআনের আয়াতগুলো আমাদেরকে স্বস্তি ও ধৈর্যের শিক্ষা দেয়।
  • দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হলে সূরা আল-ফাতিহা, সূরা আর-রহমান ও সূরা আল-ইনশিরাহ পড়া উপকারী।

৪. অধিক পরিমাণে জিকির ও দোয়া করা

আল্লাহর স্মরণ (জিকির) এবং দোয়া মানসিক শান্তির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপায়।

"জেনে রাখো, আল্লাহর স্মরণেই অন্তর প্রশান্ত হয়।" (সূরা আর-রাদ: ২৮)

  • "লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহ" ও "আস্তাগফিরুল্লাহ" বেশি বেশি পড়লে মানসিক প্রশান্তি আসে।
  • রাতে ঘুমানোর আগে "আয়াতুল কুরসি" ও তিন কুল পড়ার অভ্যাস করা।
  • নবী (সা.) বলেন: "যে ব্যক্তি দোয়া করে, আল্লাহ তার দুশ্চিন্তা দূর করে দেন।" (তিরমিজি)

৫. ধৈর্য ও কৃতজ্ঞতা চর্চা করা

জীবনের নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হলে ধৈর্য ধরতে বলা হয়েছে:

"নিশ্চয়ই ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছি আমি।" (সূরা আল-বাকারাহ: ১৫৩)

  • বিপদে হতাশ না হয়ে ধৈর্য ধারণ করলে মন শান্ত থাকে।
  • সব পরিস্থিতিতেই আলহামদুলিল্লাহ বলা এবং আল্লাহর নিয়ামতের জন্য কৃতজ্ঞ হওয়া উচিত।

৬. ভালো কাজ করা ও অন্যকে সাহায্য করা

অন্যকে সাহায্য করলে ও দান-সদকা করলে অন্তর প্রশান্ত হয়।

  • নবী (সা.) বলেছেন: "সদকা দুশ্চিন্তাকে দূর করে।" (তিরমিজি)
  • দান করলে আত্মার প্রশান্তি আসে, মানসিক চাপ কমে যায়।

৭. ইতিবাচক চিন্তা ও জীবনকে সহজভাবে গ্রহণ করা

  • অতীত নিয়ে দুঃখ করা ও ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা করা বোকামি।
  • নবী (সা.) বলেছেন: "যা হয়েছে, তা নিয়ে দুঃখ করো না। আল্লাহর ওপর ভরসা রাখো।" (মুসলিম)
  • জীবনের সব পরিস্থিতিকে আল্লাহর ইচ্ছা হিসেবে গ্রহণ করলে মানসিক চাপ কমে।

মানসিক চাপ কমানোর জন্য ইসলামে শক্তিশালী দিকনির্দেশনা রয়েছে। নামাজ, কুরআন তিলাওয়াত, জিকির, দোয়া, ধৈর্য ও ইতিবাচক মনোভাব মানুষকে চাপমুক্ত রাখে। একজন মুমিনের উচিত, নিজের জীবনকে আল্লাহর পরিকল্পনার ওপর ছেড়ে দেওয়া এবং সব পরিস্থিতিতেই ধৈর্যধারণ করা।

ওয়েল্ফশন ইসলাম ডেস্ক